ইমাম মাহদী আবির্ভাবের লক্ষণ - ৩



হযরত মাহদির আত্মপ্রকাশ
হযরত উম্মে সালামা (রাযি.) বর্ণনা করেন,"আমি আল্লাহর রাসূল (সা.) কে বলতে শুনেছি, একজন খলিফার মৃত্যুর সময় মতবিরোধ দেখা দেবে। তখন বনু হাশিমের এক লোক মদীনা ত্যাগ করে মক্কা চলে আসবে (এই আশঙ্কা করে যে, মানুষ পাছে তাকে খলিফার পদে অধিষ্ঠিত করে কিনা)। কিন্তু জনগণ তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে ঘর থে
(এই বাইয়াতের সংবাদ পেয়ে) তার বিরুদ্ধে শাম হয় থেকে একটি বাহিনী প্রেরিত হবে। বায়দা নামক স্থানে এসে পৌঁছানোর পরে এই বাহিনী তাকে ধসিয়ে দেয়া হবে। অতঃপর ইরাকের ’আসাইব’ ও শামের ’আবদাল’ তার কাছে আগমন করবেন। তারপর শামের কালব বংশের এক ব্যক্তির আগমন ঘটবে। সেই ব্যক্তি তার বিরুদ্ধে বাহিনী প্রেরণ করবে। কিন্তু আল্লাহ পরাস্ত করবেন যার ফলে তাদের উপর বিপদ নেমে আসবে। এটিই হল কালবের যুদ্ধ। যে ব্যক্তি কালবের গনিমত থেকে বঞ্চিত হবে,সে ব্যর্থ বলে বিবেচিত হবে। তারপর তিনি (মাহদী) ধনভাণ্ডার খুলে দিবেন,মাল–দৌলত বণ্টন করবেন এবং ইসলামকে বিশ্বময় সুপ্রতিষ্ঠিত করবেন। এই অবস্থা চলতে থাকবে সাত বছর কিংবা (কারো মতে) নয় বছর।” (ইবনে হিব্বান, হাদীস নং– ৬৭৫৭, আল–মূজামুল কাবির,হাদীস নং–৯৩১,আল–মুযামুল আওসাত,খ.২,পৃ.৩৫)
আবু দাউদের বর্ণনায় আরো আছে,’তারপর তিনি (মাহদী) মৃত্যুবরণ করবেন এবং মানুষ তার জানাজা আদায় করবে।’
কে বের করে আনবে এবং ও মাকামে ইব্রাহীম এর মধ্যবর্তী স্থানে তার হাতে বায়াত গ্রহণ করবেন।
জনতা বনু হাশিমের যে লোকটির হাতে বায়াত গ্রহণ করবেন, তার নাম হবে মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ যিনি ’মাহদী’ উপাধিতে পরিচিতি লাভ করবেন।
তাবারানী অপর এক বর্ণনায় আছে, ’বাইআত গ্রহণকারীদের সংখ্যা হবে বদরী মুজাহিদদের সমান অর্থাৎ তিনশো তেরজন।’ (আল–মুজমুল আওসাত,খ. ৯,পৃ. ১৭৬)
হাদিসে উল্লেখিত ’মদিনা’ শব্দ দ্বারা যদি মদীনাতুন্নবী উদ্দেশ্য হয়,তাহলে মৃত্যুবরণকারী খলিফা কোন এক সৌদি শাসক হবেন মৃত্যুর পর তাঁর স্থলাভিষিক্ত নিয়ে মতবিরোধ ঘটবে আর হযরত ছেড়ে চলে আসবেন। অবশ্য ’মদীনা’ দ্বারা অন্য কোন সাধারণ নগরীও উদ্দেশ্য হতে পারে।
হযরত মাহদির বাইয়াতের সংবাদ পাওয়া মাত্রই একটা বাহিনী তার বিরুদ্ধে বেরিয়ে পড়বে। এর অর্থ হল, কাফেররা হযরত মাহদির অপেক্ষায় থাকবে এবং গোয়েন্দা মারফত হারাম শরীফের খবরাখবর সংগ্রহ করবে।
এই শুধু এতোটুকু উল্লেখ করা হয়েছে যে, বাহিনী প্রেরণকারী লোকটা কালব গোত্রের সদস্য হবে। এর ব্যাখ্যায় তুরবশতি (রহ.) বলেছেন, ’সুফিয়ানী যখন হযরত মাহদির সঙ্গে বিরোধে লিপ্ত হবে তখন সে স্বীয় গোত্রের কাছে সাহায্য কামনা করবে।’ এর অর্থ হলো সে সময় বনু কালবও আরবের কোন একটি রাষ্ট্র শাসন করবে এবং তারা ইসলামের বিরোধিতায় লিপ্ত থাকবে। তাবারানীরই অপর একটি বর্ণনায় এই ব্যক্তি সম্পর্কে আরও বলা হয়েছে,’লোকটা কুরাইশ বংশোদ্ভূত হবে।’ অপর একটি বর্ণনায় আছে সে ’সুফিয়ানী’ নামে পরিচিত হবে।
’বায়দা’ নামে দুটি অঞ্চল আছে । একটি শামে, একটি উর্দুনে (জর্ডান)। কিন্তু মুসলিম শরীফের ব্যাখ্যাকার ইমাম নববী (রহ.) লিখেছেন এখানে বায়দা দ্বারা উদ্দেশ্য মদিনার বায়দা যেটি  যুলহুলাইফার সন্নিকটে অবস্থিত।
প্রথম বাহিনী বায়দায় এসে ধসে যাওয়ার পর হযরত মাহদি মুজাহিদদের নিয়ে শামের দিকে এগিয়ে যাবেন। সেখানে অন্য এক বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করবেন এবং তাদের পরাজিত করবেন। এই যুদ্ধকেই হাদিসে ’কালব যুদ্ধ’ নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এই বাহিনীর নেতা উপাধি হবে ’সুফিয়ানী’। হযরত মাহদি ইসরাইলের তাবরিয়া জলপ্রপাতের সন্নিকটে তাকে হত্যা করবেন। ( আহসুনানুল ওয়ারিদাতু ফিলফিতান)
পর্ব ২-

Comments

Popular posts from this blog

খোরাসানের কালো পতাকাবাহী দল সম্পর্কে হাদীসের ভবিষ্যৎবাণী

ইমাম মাহাদি (আ) কবে আসবেন?

ফোরাত নদীর তীরে সোনার পাহাড় কোথায় এবং কবে ভেসে উঠবে? (২০২৩ সালে ইনশাল্লাহ)