ইমাম মাহদী আগমনের পূর্বে পৃথিবীর অবস্থা - ৩


💿আধুনিক প্রযুক্তির ব্যাপারে ভবিষৎবাণী💿

হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাযি:) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা:) বলেছেন,
"আমি সেই সত্তার শপথ করে বলছি,যাঁর হাতে আমার জীবন,কেয়ামত সেই সময় পর্যন্ত সংঘটিত হবে না, যতক্ষণ না হিংস্র জন্তুরা মানুষের সাথে কথা বলেব। আর যতক্ষণ না মানুষের উরু তাকে তথ্য জানাবে, তার অনুপস্থিতিতে তার স্ত্রী কী-কী কাজ করেছে।" (মুসতাদরাকে হাকেম, খ. ৪,পৃ. ৫১৫; তিরমীযী,হাদীস নং : ২১০৮)

হাদীসটি একই ভাবে আরেক বর্ণনায় এরূপ-
ইমাম আহমাদ (রঃ) আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন, ‘‘জনৈক রাখাল মাঠে ছাগল চরাচ্ছিল। হঠাৎ একটি নেকড়ে বাঘ এসে একটি ছাগলের উপর আক্রমণ করলো। রাখাল বাঘের পিছনে ধাওয়া করে ছাগলটি ছিনিয়ে আনল। বাঘটি একটি টিলার উপর বসে বলতে লাগলোঃ তুমি কি আল্লাহকে ভয় করোনা? আল্লাহ আমাকে একটি রিজিক দিয়েছিলেন। আর তুমি তা ছিনিয়ে নিলে। রাখাল বললঃ কি আশ্চর্য্য ব্যাপার! মানুষের ন্যায় বাঘও আমার সাথে কথা বলছে। বাঘ বললোঃ আমি কি তোমাকে এর চেয়ে আশ্চর্য্যজনক খবর দিবোনা? মদীনায় মুহাম্মাদ (সা:) অতীতে যা ঘটেছে এবং আগামীতে যা ঘটবে তা সম্পর্কে মানুষকে সংবাদ দিচ্ছে। রাখাল তার ছাগলের পাল নিয়ে মদ্বীনায় প্রবেশ করে ছাগলগুলো এক স্থানে রেখে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর কাছে এসে ঘটনা খুলে বলল। এতক্ষণে নামাযের সময় হয়ে গেল। নামায শেষে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাখালকে বললেনঃ ‘‘তুমি সবার সামনে ঘটনা খুলে বল’’। সে ঘটনা বর্ণনা শেষ করলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ রাখাল সত্য বলেছে। ঐ আল্লাহর শপথ! যার হাতে আমার প্রাণ ততদিন পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবেনা যতক্ষণ না হিংস্র প্রাণী মানুষের সাথে কথা বলবে। মানুষ তার হাতের লাঠির সাথে কথা বলবে, পায়ের জুতার সাথে কথা বলবে। এমনকি ঘরের স্ত্রী তার স্বামীর অনুপস্থিতে কি করছে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তাকে বলে দিবে’’। (মুসনাদে আহমাদ, ইমাম আলবানী সহীহ বলেছেন, সিলসিলায়ে সাহীহা হাদীছ নং- ১২২)

অত্র হাদীসটি নবী (সা:) এর এক বিস্ময়কর মোজেজা যে,তিনি এমন এক যুগে বসে কথাটি বলেছেন, যে যুগে আধুনিক প্রযুক্তির কথা কেউ কল্পনাও করেনি। অথচ এ যুগের ইলেকট্রনিক চিপ, RFID চিপ, ট্রান্সমিশন চিপ চিৎকার করে নবী (সা:) এর সেই ভবিষৎবাণীর সত্যতা প্রমাণ করছে। উন্নত দেশগুলো এ ধরনের চিপ তৈরি তো করেছেই, এমনকি মানব শরীরে স্থাপন করেও অনেকদূর এগিয়েছে। এই চিপ গুলো মানব শরীরে স্থাপন করলে দূরে অবস্থান করা অপর ব্যক্তি তার প্রত্যেকটি কথা শুনতে পায়,তার প্রত্যেকটি অবস্থান তার নজরে থাকে। তাছাড়া শরীর থেকে খুলে সেই চিপের ডাটা কম্পিউটার ইত্যাদিতে ডাউনলোড করা হলে সব তথ্য বেরিয়ে আসে যে,এই লোকটা বা ব্যক্তিটা তার অনুপস্থিতিতে কি কি করেছে। এই যন্ত্রগুলো সাধারণত পায়ে বা বাহুতে ব্যবহার করা হয়। অত্যন্ত সূক্ষ্ম আকৃতির এই চিপগুলো সহজেই মানব শরীরে সেট হয়ে যায়। অপারেশন করে তো বটেই,এমনকি আপনার পাশ দিয়ে যাবার সময়ও আপনার অজান্তেই কেউ একজন এসব চিপ আপনার শরীরে প্রবেশ করিয়ে দিতে পারে। আপনি কিছুই টের পাবেন না। কিন্তু আপনার সব তথ্য তার কাছে পৌছে যাবে।  আপনার জেনে অবাক হবেন যে, কেয়ামতের এই আলামতটি অল্প কয়েক বছর আগে সংগঠিত হয়ে গেছে । তবুও কি এখন বলা হবে যে,কেয়ামত এর এখনো অনেক সময় বাকি আছে,,?
আবার হাদীসে বলা আছে কেয়ামতের পূর্বে জুতার ফিতাও কথা বলবে। আল্লাহু আকবার!   কেয়ামতের এই আলামতটি অল্প কয়েক বছর আগে সংগঠিত হয়ে গেছে। এই জুতাকে Smart shoe The World's First Intelligent Sneaker বলা হয়। এই জুতা এখন একটি স্মার্ট ফোনের মতই মানুষ সাথে কথা বলছে। গত কয়েক বছরে ইউরোপ আমেরিকারতে প্রচুর পরিমাণ সেল হয়েছে। (লিঙ্ক ______

https://www.kickstarter.com/projects/141658446/digitsole-smartshoe-the-worlds-first-intelligent-s
https://youtu.be/rQYTwmSHza)

বাকি থাকল মানুষের সাথে জীব-জন্তুর কথা বলাটা। পশ্চিমা বিশ্ব জীব-জন্তুর কথা বুঝার ও তাদের সাথে কথা বলার প্রযুক্তিও আবিষ্কার করে ফেলেছে। যার নাম animal- computer interaction। এটা দিয়ে প্রাথমিকভাবে কুকুরের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা হচ্ছে। জর্জিয়া ইন্সটিটিউট অব টেকনোলোজির একদল গবেষক এই টেকনিক আবিষ্কার করেছেন। বলা বাহুল্য এই টেকনোলোজি  শুধু কুকুরেই সীমাবদ্ধ থাকছে না। সুতরাং বুঝতেই পারছেন উক্ত হাদীসের বাস্তবতা কতদূর পৌঁছেছে। কথা প্রসঙ্গে বলে রাখি, শুধু জুতা,চিপ,জন্তুই নয়, খুব দ্রুতই কথা বলবে ক্রিকেট বলও! মাইক্রোচিপ সমন্বিত এই স্মার্ট বল নির্মাণ করছে ক্রীড়া সরঞ্জামাদি তৈরির প্রতিষ্ঠান কোকাবুরা। যা কিনা আগামী বছর অস্ট্রেলিয়ান বিগ ব্যাশে মাঠে গড়াবে। এরপরও কি মনে হয়, কেয়ামত এখনো অনেক দূরে??

Comments

Popular posts from this blog

খোরাসানের কালো পতাকাবাহী দল সম্পর্কে হাদীসের ভবিষ্যৎবাণী

ইমাম মাহাদি (আ) কবে আসবেন?

ফোরাত নদীর তীরে সোনার পাহাড় কোথায় এবং কবে ভেসে উঠবে? (২০২৩ সালে ইনশাল্লাহ)