ইমাম মাহদী আগমনের পূর্বে পৃথিবীর অবস্থা - ৬
✒️ পাঁচটি মহাযুদ্ধ ✒️
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাযি:) বলেন,
"(পৃথিবীর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত) মানুষের মহাযুদ্ধ পাঁচটি। এর মধ্যে দুটি (এই উম্মতের আগে) বিগত হয়েছে। অবশিষ্ট তিনটি এই উম্মতের মাঝে সংঘটিত হবে। এর একটি হল তুর্কি মহাযুদ্ধ, একটি রোমানদের সাথে মহাযুদ্ধ আর তৃতীয়টি হল দাজ্জালের মহাযুদ্ধ। দাজ্জালের পর আর কোন মহাযুদ্ধ হব না।" (আল-ফিতান,খ.২,পৃ. ৫৪৮; আসসুনানুল ওয়ারিদাতু ফিল ফিতান)
হযরত মাহদীর আমলে অনুষ্ঠেয় বিগ্রহ সম্পর্কে একটি কথা মনে রাখা দরকার যে,এইসব যুদ্ধই মহাযুদ্ধ হবে। অর্থাৎ সত্য ও মিথ্যার চূড়ান্ত লড়াই হবে এগুলো। উভয় পক্ষই ততক্ষণই যুদ্ধ চালিয়ে যাবে, যতক্ষণ না তা সবটুকু শক্তি নিঃশেষ হয়ে যায়। সামান্য শক্তিও অবশিষ্ট থাকা পর্যন্ত কেউই পিছপা হবে না। তাছাড়া এই যুদ্ধগুলো শুধু ইমাম মাহদীর অঞ্চল পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকবে না। বরং একই সময়ে একাধিক অঙ্গনে লড়াই হবে। এর মধ্যে একটি অঙ্গন হবে সেটি,যাতে হযরত মাহদী স্বয়ং সেনাপতিত্ব করবেন। অপর বড় রণাঙ্গনটি হবে ফিলিস্তিন। তৃতীয়টি হবে ইরাক, যেটি হাদীসে "ফোরাত তীরের যুদ্ধ" নামে অভিহিত। আরেক বৃহৎ রণাঙ্গন হল ভারত উপমহাদেশ। এছাড়াও আরো একাধিক ছোট-খাট রণাঙ্গন তৈরি হতে পারে।
সবকটি যুদ্ধক্ষেত্রের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব অর্থাৎ যুদ্ধগুলোতে মুসলমানদের হেডকোয়ার্টার হবে দামেশকের সন্নিকটস্থ 'আলগুতা' নামক স্থানে। প্রতিটি যুদ্ধক্ষেত্রের কমান্ডারদের সাথে ইমাম মাহদীর যোগাযোগ থাকবে। এ বিষয়ে মহানবী (সা:) এর বর্ণিত হাদীসটি হল-
"মহাযুদ্ধের সময় মুসলমানদের তাঁবু হবে শামের সর্বোন্নত নগরী দামেশকের নিকটে আলগুতা নামক স্থানে।" (সুনানে আবু দাউদ,খ. ৪,পৃ. ১১১;মুসতাদরাকে হাকেম,খ. ৪,পৃ.৫৩২)
এই আলগুতা শামের রাজধানী দামেশক থেকে পূর্বে প্রায় সাড়ে আট কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটা অঞ্চল। এখানকার মওসুম সাধারণত উষ্ণ। তাপমাত্রা জুলাইয়ে সর্বনিম্ন ১৬.৫ এবং সর্বোচ্চ ৪০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জানুয়ারিতে সর্বনিম্ন ৯.৩ এবং সর্বোচ্চ ১৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
যুদ্ধের দামামা বাজছে অথচ মুসলিম জাতি নিজেদের অলসতা ও অবহেলার কারণে আগত বাস্তবতার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করছে না। কিন্তু কুফরি শক্তি ঠিকই এর জন্য প্রস্তুতি সম্পন্ন করে যাচ্ছে এবং প্রকাশ্যে তার ঘোষণাও দিচ্ছে। কেউ যদি এই ভেবে অপেক্ষায় থাকেন যে,হযরত মাহদী এসে মহাযুদ্ধের ঘোষণা দিবেন,তবে আপনি অপেক্ষাই করতে থাকুন। আপনার অপেক্ষার পালা কোনদিনই শেষ হবে না। কারণ মাহদীর যখন আবির্ভাব ঘটবে, ততক্ষণে যুদ্ধের ঘোষণা নয়,বরং যুদ্ধ শেষের পথে।
Comments
Post a Comment