ইমাম মাহদী আগমনের পূর্বে পৃথিবীর অবস্থা - ১
ইমাম মাহদী আগমনের পূর্বে পৃথিবীর অবস্থা অর্থাৎ ইমাম মাহদী আগমনের লক্ষণ আর কেয়ামতের আলামত বা লক্ষণ একই। আজ একটি আলামত নিয়ে কিছু আলোচনা হয়ে যাক।
♨️♨️মদীনা শরীফ থেকে হেজাজ নামক আগুনের আত্মপ্রকাশ♨️♨️
হযরত আবু হুরায়রা (রাযি:) বর্ণনা করেন,রাসূল (সা:) বলেছেন,
"যতক্ষণ না হেজাজ থেকে একটি আগুন প্রজ্জলিত হয়ে বসরার উটগুলোর ঘাড়কে আলোকিত করে দেবে,ততক্ষণ কিয়ামত সংঘটিত হবে না।" (বুখারী,খ.২পৃ.১০৫৪,মুসলিম,খ.২,পৃ.৩৯৩)
এই হাদীসে যে আগুনের কথা বলা হয়েছে,আল্লামা ইবনে কাছীর (রহ.) ও অন্যান্য ঐতিহাসিকদের মতে,সেই আগুন ৬৫০ হিজরীর জমাদিউস সানি মাসের এক শুক্রবারে পবিত্র মদীনার হেজাজ থেকে আত্মপ্রকাশ করেছিল এবং প্রায় একমাস বহাল ছিল।
বর্ণনাকারীদের মতে, হঠাৎ হেজাজের দিক থেকে এমন এক আগুন বের হল,মনে হচ্ছিল সেটি আগুনে পূর্ণ একটি নগরী আর তাতে দূর্গ,বুরুজ সবই আছে। তার দৈর্ঘ্য ছিল চার ফালং আর প্রস্থ চার মাইল। আগুনের ধারা যে পাহাড় স্পর্শ করত,তাকে সীসা ও মোমের মত গলিয়ে দিত। তার শিখার মধ্যে বিজলীর গর্জন আর সমুদ্র তরঙ্গের ন্যায় জোশ ছিল। মনে হত,যেন তার মধ্য থেকে লাল ও নীল বর্ণের সমুদ্র বেরিয়ে আসছে। উক্ত আগুন এইরূপে পুরো মদীনায় পৌছে গিয়েছিল। তবে আশ্চর্যকথা এই যে,তার শিখামালার দিক থেকে যে বায়ু মদীনার দিকে আসছিল,তা ঠাণ্ডা ছিল।
অধিকাংশ আলেমদের মতে,এই আগুনের গ্রাস মদীনার সবগুলো বন-বাদাড়কে আলোকিত করেছিল। এমনকি হারামে নববী ও মদীনার সমস্ত ঘরবাড়ি দিনের আলোর মত আলোকিত ছিল। মানুষ রাতের বেলা সেই আলোতে সমস্ত কাজ আঞ্জাম দিত এবং সেই দিনগুলোতে উক্ত অঞ্চলের উপর সূর্য ও চাঁদের আলো ম্লান হয়ে গিয়েছিল। মক্কার কিছু লোক সাক্ষ্য দিয়েছিল,সেসময় তারা ইয়েমেন ও বসরায় ছিলেন। হেজাজের সেই আগুন সেখানেও দেখা গেছে।
এই আগুনের বিস্ময়কর বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি ছিল,এই আগুন পাথরকে পুড়িয়ে কয়লা বানিয়ে দিয়েছিল কিন্তু গাছপালার উপর এর কোন প্রভাব পড়েনি। বর্ণিত আছে,বনে অনেক বড় একটা পাথর ছিল,যার অর্ধেক মদীনার হারামের সীমানার মধ্যে আর বাকি অর্ধেক ছিল হারামের বাইরে। আগুনে হারামের বাইরের অংশটুকু পুড়ে কয়লা হয়ে গেলেও যে অংশটা হারামের ভিতরে ছিল তা অক্ষতই ছিল। বসরার অধিবাসীরাও সাক্ষ্য দিয়েছে,সে রাতে হেজাজের আগুনে তারা তাদের উটের ঘাড়গুলোকে আলোকিত দেখেছে।
Comments
Post a Comment